ফের বিতর্কে ডিআইজি মিজান
এক নারীকে জোর করে বিয়ের অভিযোগ উঠায় আবার বিতর্কে জড়িয়েছেন ডিআইজি পদমার্যাদার পুলিশ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অবস্)-এর দায়িত্ব পালন করছেন।
ডিএমপিতে পদায়নের আগে সিলেটে কর্মরত ছিলেন মিজান। ২০১৪ সালে সিলেটের এক জেষ্ঠ্য সাংবাদিককে নারী নির্যাতন মামলায় গ্রেপ্তার করার প্রেক্ষিতে আলোচনায় উঠে আসেন মিজান। ২০১৪ সালের ১৯ আগস্ট ওই সাংবাদিককে গ্রেপ্তারের পেছনে মিজানুরের হাত ছিলো বলেও সেসময় অভিযোগ করেন সিলেটের সাংবাদিক নেতারা। এই ঘটনার পর মিজানুর রহমানকে বদলির দাবি ওঠে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে।
এ ঘটনার কিছুদিন পর মহানগর পুলিশের কমিশনার থেকে বদলি করা হয় মিজানুর রহমানকে। যোগ সিলেটের ডিআইজি হিসেবে। ডিআইজি হিসেবেও আলোচনায় ছিলেন মিজান। সেখান থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে যোগ দেন।
এবার বড় ধরণের বিতর্কেই জড়িয়েছেন শীর্ষস্থানীয় এই পুলিশ কর্মকর্তারা। এক নারী অভিযোগ করেছেন তুলে নিয়ে তাকে বিয়ে করেন মিজানুর। যদিও এই পুলিশ কর্মকর্তার দাবি, ওই নারী প্রতারক।
ওই নারী দৈনিক যুগান্তরকে বলেন, পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালের কাছে তার বাসা। সেখান থেকে কৌশলে গত বছরের জুলাই মাসে তাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা মিজান। পরে বেইলি রোডের মিজানের বাসায় নিয়ে তিনদিন আটকে রাখা হয়েছিল তাকে।
ওই নারী দাবি করেছেন, আটকে রাখার পর বগুড়া থেকে তার মা’কে ১৭ জুলাই ডেকে আনা হয় এবং ৫০ লাখ টাকা কাবিননামায় মিজানকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়। পরে লালমাটিয়ার একটি ভাড়া বাড়িতে তাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে রাখেন ইতোপূর্বে বিবাহিত মিজান।
এই নারীর অভিযোগ, কয়েক মাস কোনো সমস্যা না হলেও ফেইসবুকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে একটি ছবি তোলার পর ক্ষিপ্ত হন মিজান। ভাংচুরের ‘মিথ্যা’ একটি মামলা দিয়ে তাকে গত ১২ ডিসেম্বর কারাগারে পাঠানো হয়। সেই মামলায় জামিন পাওয়ার পর মিথ্যা কাবিননামা তৈরির অভিযোগে আরেকটি মামলা করানো হয়।
দুটি মামলায় জামিনে বেরিয়ে আসার পর পুলিশ কর্মকর্তা মিজানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলেন ওই নারী।
মগবাজারের কাজী অফিসের কাজী মাওলানা সেলিম রেজা ভুয়া কাবিননামা তৈরির অভিযোগে ওই নারীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করলে আদালতের নির্দেশে তা রমনা থানা পুলিশ নথিভুক্ত করে।
কবে মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম’র কাছে বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ ‘পুরোপুরি মিথ্যা’।
তিনি বলেন, “আমার স্ত্রীর সঙ্গে আমার ভালো বোঝাপড়া। আমরা পারিবারিক জীবনে সুখী। আমাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য স্বামী বানিয়ে মিথ্যা প্রচার চালানো হচ্ছে।”
অভিযোগকারী নারীকে ‘প্রতারক’ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ওই নারী ২০১৫ সালে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি জিডি করেছিলেন। সেই সূত্রে তার সঙ্গে পরিচয়।
ওই নারীর বিরুদ্ধে রমনা থানায় ভাংচুরের মামলার বিষয়ে মিজান বলেন, গত বছরের ১৬ জুলাই এই নারী বেইলী রোডের তার ভাইয়ের বাসায় জোর করে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। তখন থানায় একটি মামলা হয়। অভিযোগপত্র দেওয়ার পর এটি এখন বিচারাধীন।
ওই নারী কেন ওই বাসায় ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি পুলিশ কর্মকর্তা মিজান।
তিনি দাবি করেন, ওই নারী সেসব অভিযোগ করেছিলেন, তা ইতোমধ্যে প্রত্যাহারও করে নিয়েছেন।
সূত্র: বিডিনিউজ, যুগান্তর